এডিস নিধনে তৎপরতা না থাকায় জনমনে শঙ্কা
ডেঙ্গু মোকাবিলায় এবারই প্রথম ঢাকার বাইরের চিকিৎসকদের আনা হয়েছে প্রশিক্ষণের আওতায়। তবে এডিস মশা নিধনে মাঠপর্যায়ে চোখে পড়ছে না তেমন কোনো তৎপরতা। দ্রুত কর্মপরিকল্পনা ঠিক না করলে আসছে মৌসুমে গতবারের ভয়াবহতা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত বছর ছিল ডেঙ্গুর জন্য ভয়াবহ একটি বছর। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ছাপিয়েছিল একলাখ। দুই দশকের ইতিহাসে এবারই প্রথম ৬৪ জেলাতেই মিলেছে ডেঙ্গু রোগী। ১৫টি জেলায় রোগীর সংখ্যা ছিল এক হাজারের বেশি।
কিশোরগঞ্জ ১৩০০, মুন্সিগঞ্জ ১৮৩৮, ফরিদপুর ১১৪২, ময়মনসিংহে ১৬৪৪, কুমিল্লায় ১২৬৩, চাঁদপুরে ১৩৮৯, চট্টগ্রামে ১৭০৬, কুষ্টিয়ায় ১৫৭১, যশোরে ৪০৬৮, মেহেরপুরে ১৮১৭, বগুড়ায় ১০৭৯, সিরাজগঞ্জে ১০৯৪, পিরোজপুরে ১২০৭, বরিশালে ৩০৪৪, সিলেটে ১০১১ জন।
সাধারণত বংশ বিস্তারের জন্য এডিস স্বচ্ছ পানিকেই বেছে নেয়। পানি শুকিয়ে গেলেও লার্ভা বেঁচে থাকে এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে এডিস নিধনে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় তেমন কোনো তৎপরতা না থাকায় আসছে মৌসুম নিয়ে শঙ্কায় সাধারণ মানুষ।
স্বাস্থ্য বিভাগ বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা বললেও সবই ডেঙ্গু মোকাবিলায়। এডিস নিয়ন্ত্রণে এখনো মাঠপর্যায়ে নিজেদের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে পারেনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এডিস বাহিত রোগ বিভাগের ডিপিএম ডা. আফসানা আলমগীর খান বলেন, আশা করা যাচ্ছে এবার অত্যন্ত যশোর-সাতক্ষীরা বরিশাল এ অঞ্চলগুলোতে রোগী হয়ত আসবে তবে ম্যানেজমেন্ট ঠিক মতো করতে পারবো।
স্থানীয়সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, এখনো তো মশার পাদুর্ভাব দেখা যায়নি, বৃষ্টি তো হয়নি, কিন্তু এরমধ্যে আমরা ৫ থেকে ৬টি বৈঠক করেছি। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা সবার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে।
কিট তত্ত্ববিদ তৌহিদ উদ্দিন আহমেদ বলছেন, এমন সমন্বয়হীনতা অশনিসংকেত। এখনই জেলাভিত্তিক পরিকল্পনা না নিলে এবার ভয়াবহতা হবে আরো বেশি।
তিনি বলেন, সেই সমস্ত এলাকাতে ফগিংয়ের ব্যবস্থা করা যায়, লোকজনকে বলা যায় মশার মাধ্যমে এ রোগটি ছড়ায়, তাই বাড়ির পাশে ঝোপঝাড় পরিষ্কার রাখে তাহলে রোগ থেকে কিছুটা বেঁচে যেতে পারি। মূলত এখানে সচেতনতা খুব বেশি দরকার।
গত মৌসুমে ঢাকার বাইরে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৫ জন।